আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাস্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। যা প্রযুক্তির গুরুত্ব অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাস্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। শুরুর দিকে ধারণা করা হতো ফয়ংক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তির প্ররোগের ফলে বিশ্বব্যাপী কাজের পরিমাণ কমে যাবে এবং বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তন হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থানের সুযোগও দ্রুতহারে বেড়ে গেছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে যা বাঙালি শিক্ষাবিদ ও বর্তমানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক ড. ইকবাল কাদির এর মতে- সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা (Connectivity is Productivity) অর্থাৎ প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে। ফলে তৈরি হয় নতুন নতুন কর্মসংস্থান।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে। ফলে, অনেক প্রতিষ্ঠানই স্বপ্ন কৰ্মী দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে –
• বিভিন্ন কারখানার বিপজ্জনক কাজগুলো মানুষের পরিবর্তে রোবট কিংবা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যেতে পারে ।
• কর্মস্থলে কর্মীদের উপস্থিতির সময়কাল, তাদের বেতন-ভাতাদি ইত্যাদি হিসাব করার জন্য বেশ কিছু কর্মীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় উপস্থিতি যন্ত্র, বেতন-ভাতাদি হিসাবের সফটওয়্যার ইত্যাদির ব্যবহারের মাধ্যমে এ সকল কাজ সম্পন্ন করা যায় ।
• বিভিন্ন গুদামে মালামাল সুসজ্জিত করার কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যায়।
• টেলিফোন এক্সচেঞ্জে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল ব্যবস্থার কারণে পৃথক জনবলের প্রয়োজন হয়
স্বয়ংক্রিয় ইন্টারেকটিভ ভয়েস প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিন-রাত যেকোনো সময় গ্রাহকের নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাব দেওয়া যায়।
• ব্যাংকের এটিএম এর মাধ্যমে যেকোনো সময় নগদ অর্থ তোলা যায় ।
অন্যদিকে আইসিটির কারণে অনেক কাজের ধরন প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে –
• পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য নিজেকে ক্রমাগত দক্ষ করে তুলতে হয়। ফলে দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে।
কম্পিউটারের সাহায্যে অনেক ধরনের কাজ ঘরে বসেই করা সম্ভব হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পূর্বে বিশেষ দক্ষতা না থাকলে যে কাজ সম্পন্ন করা যেত না, এরূপ অনেক কাজ কম্পিউটারের সহায়তায় সহজে সম্পন্ন করা যাচ্ছে। যেমন ফটোগ্রাফি বা ভিডিও এডিটিং।
• অনেকে ঘরে বসে কাজ করছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে সহায়ক কর্মীর সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি তাদের কাজের ধরনও পাল্টে গেছে।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হওয়াতে কর্মীদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে, ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ
1 thought on “কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাস্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি”