আজকে আমরা সিনক্রোনাস ও অ্যাসিনক্রোনাস কমিউনিকেশন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা কমিউনিকেশনের মৌলিক ধারণার অন্তর্গত।
Table of Contents
সিনক্রোনাস ও অ্যাসিনক্রোনাস কমিউনিকেশন পদ্ধতি
সিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন (Synchronous data transmission)
যে ডাটা কমিউনিকেশন সিস্টেমে প্রেরক স্টেশন থেকে ডাটাকে প্রথমে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসে স্টোর করে নেওয়া হয় অতঃপর ক্যারেক্টারসমূহকে ব্লক আকারে প্রতিবারে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাতে সিনক্রোনাস কমিউনিকেশন বলে প্রতিটি ব্লকে কমপক্ষে 80-120টি ক্যারেক্টার থাকে।
এ ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে ব্লক আকারে ডাটাকে প্রেরক স্টেশন থেকে গ্রাহক স্টেশনে পাঠানো হয়।
পদ্ধতি (System):
এ পদ্ধতিতে ডাটাগুলোকে প্রথমে কোন ফিজিক্যাল স্টোরেজ ডিভাইসে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরবর্তীতে অরক্ষিত ডাটাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্লকে ভাগ করে প্রেরক স্টেশন থেকে গ্রাহক স্টেশনে ট্রান্সমিট করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি ব্লকের মধ্যবর্তী বিরতি সময় (Interval time) নির্দিষ্ট থাকে। প্রতিটি ব্লকে 80 থেকে 132টি ক্যারেকটার থাকে। ব্লক ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে একের সাথে হেডার (Header) ট্রেলার (Trailer) নামক অতিরিক্ত ব্লক সংযুক্ত থাকে।
প্রতিটি হেডারে নিম্নলিখিত তথ্য (Information) থাকে:
(ক) প্রেরক ও প্রাপক এর অ্যাড্রেস
(খ) প্রেরক ও প্রাপকের ব্লকের গতির (Speed) সমতা বিধান ইনফরমেশন।
প্রতিটি ট্রেলারে (Trailer) নিম্নলিখিত তথ্য থাকে:
(ক) প্রতিটি ব্লকের মেসেজ (message) পাঠানোর ক্ষেত্রে কোন ভুল (eror) থাকলে তা সংশোধন করার তথ্য।
(খ) যে ব্লককে ট্রান্সমিট করা হবে তাকে Point করার তথ্য।
চিত্রে সিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতির ব্লক চিত্র দেখানো হয়েছে।
সিনক্রোনাস কমিউনিকেশনের সুবিধা ও অসুবিধা :
সুবিধাসমূহ
(ক) এর ইফিসিয়েন্সি অ্যাসিনক্রোনাস এর তুলনায় অত্যন্ত বেশি (high)।
(খ) অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সমিট হয়।
(গ) প্রত্যেক ক্যারেক্টারের শুরু এবং শেষে স্টার্ট (Start) ও স্টপ (Stop) বিটের প্রয়োজন হয় না।
(ঘ) ট্রান্সমিশন লাইন অব্যবহৃত অবস্থায় থাকে না।
(ঙ) প্রেরিত ডাটা এর ভুল নির্ণয় করা সহজ।
(চ) দ্বিমুখী-ডাটা কমিউনিকেশনে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা সুবিধাজনক।
(ছ) রিমোট কমিউনিকেশনের জন্য এ পদ্ধতি বিশেষ উপযোগী।
(জ) ব্লক আকারে ডাটা ট্রান্সমিট হওয়াতে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক ডাটা ট্রান্সমিট করা যায়।
অসুবিধাসমূহ
(ক) প্রেরক স্টেশনে প্রেরকের সাথে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয়, ফলে সিস্টেমের মূল্য বৃদ্ধি পায়।
(খ) গৃহীত ডাটা থেকে ক্যারেক্টার নির্ণয় করা কঠিন।
(গ) লাইনের উভয় প্রান্তে সঠিক সমন্বয়কারী ব্লক (Clock) এর প্রয়োজন হয়।
(ঘ) ডাটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি তুলনামূলক জটিল।
অ্যাসিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous data transmission) ঃ
যে ডাটা কমিউনিকেশন সিস্টেমে ডাটা প্রেরক স্থান থেকে প্রাপক স্থান পর্যন্ত ক্যারেক্টার বাই (by) ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশন বলে।
এ ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে প্রেরক (Sender) হতে গন্তব্যে (Receiver) ডাটা ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার (Character by character) ট্রান্সমিট হয়।
পদ্ধতি (System)ঃ
এ পদ্ধতিতে প্রতি ক্যারেক্টারের শুরুতে একটি শুরু (Start) নিউ এবং শেষে একটি বা দুটি শেষ (Stop) টি ৩ ভুল নির্ণয় নিট (Error check bit) থাকে। সাধারণত একটি ক্যারেক্টার এর জন্য বিটের প্রয়োজন হয়। এই বিটের সাে (Start), শেষ (Stop) ও প্যারিটি বিট (Parity bit) সম্মিলিতভাবে 10 থেকে ।। বিটের ক্যারেক্টার পাঠায়। এই সিস্টেমে যে কোন সময় ডাটা প্রেরণ করতে পারে এবং প্রাপক (Receiver) তা গ্রহণ করতে পারে। একটি ক্যারেক্টার পাঠানোর পর আর একটি ক্যারেক্টার পাঠানোর ক্ষেত্রে ক্যারেক্টারদ্বয়ের মধ্যবর্তী যে বিরতি সময় (interval time) তা সমান না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।নিম্নে অ্যাসিনক্রোনাস পদ্ধতির ব্লক চিত্র দেখানো হয়েছে।
এ ধরনের ট্রান্সমিশন পদ্ধতিকে স্টার্ট-স্টপ (Start-stop) ট্রান্সমিশনও বলা হয়। কারণ প্রতিটি ডাটা ক্যারেক্টারের শুরুতেই একটি স্টার্ট (Start) বিট থাকে, যা দ্বারা ক্যারেক্টারের শুরু নির্দেশিত হয় এবং ক্যারেক্টারের শেষে 12টি স্টপ (Stop) বিট দ্বারা ক্যারেক্টার ট্রান্সমিশন শেষ হওয়াকে নির্দেশ করে। চিত্র ১.১৪ তে অ্যাসিনক্রোনাস ডাটা ট্রান্সমিশনের বিট ফরম্যাট দেখানো হয়েছে। যখন কোন ডাটা পাঠানো হয় না, তখন সিগন্যাল লাইন হাই (high) বা মার্কিং স্টেটে (marking state) থাকে, ডাটা ক্যারেক্টারের প্রথম বিটটি লো (low) হয়ে ডাটা ক্যারেক্টারের শুরু নির্দেশ করে।
এরপর ডাটা বিটগুলোকে একটির পর একটি করে ট্রান্সমিশন লাইনে পাঠানো হয়। ডাটা বিট ও প্যারিটি বিট পাঠানো হয়ে গেলে ট্রান্সমিশন লাইনের অন্ততঃপক্ষে । বিট হাই হয়ে ক্যারেক্টারের সমাপ্তি নির্দেশ করে। চিত্র তে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে দু’টি ASCII ক্যারেক্টার “G” ও “J” এর ট্রান্সমিশন পদ্ধতি দেখানো হয়েছে।
অ্যাসিনক্রোনাস কমিউনিকেশনের সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধাসমূহ
(ক) যে কোন সময় প্রেরক ডাটা পাঠাতে পারে এবং প্রাপক তা গ্রহণ করতে পারে।
(খ) ডাটা পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রেরকের কোন প্রাইমারি স্টোরেজ এর প্রয়োজন হয় না।
(গ) সহজে ডাটা পাঠানো যায়।
(ঘ) গৃহীত ভাটা থেকে সহজে ক্যারেক্টার নির্ণয় করা যায়।
(ঙ) দামি হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হয় না।
(চ) একমুখী ফাটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি সুবিধাজনক।
(ছ) ইনস্টলেশন চার্জ অত্যন্ত কম।
অসুবিধাসমূহ :
(ক) ইফিসিয়েন্সি (efficiency) কম।
(খ) ডাটা ট্রান্সমিশনের গতি (speed) কম।
(গ) ডাটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে ভুল নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর
(ঘ) দ্বিমুখী ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে একে ব্যবহার করা অসুবিধাজনক নয়।
(ঙ) যখন ডাটা ট্রান্সমিট হয় না তখন ট্রান্সমিশন মিডিয়াটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে, যা মাইক্রোওয়েভ বা স্যাটেলাইট মিডিয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
সিনক্রোনাস ও অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনর মধ্যে পার্থক্য (Difference between synchronous and asynchronous transmission) ঃ
অ্যাসিনক্রোনাস |
সিনক্রোনাস |
(ক) এ প্রকার ট্রান্সমিশন পদ্ধতি ক্যারেক্টার-ভিত্তিক হয়ে থাকে এবং প্রতিটি ক্যারেক্টারকে ASCII কোডে রূপান্তর করে ট্রান্সমিট করা হয়। | (ক) এ প্রকার ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে প্রতিবার একটি Fixed অথবা ভেরিয়েবল লেংথ (length)-এ ডাটা ব্লক ট্রান্সমিট করা হয়। |
(খ) প্রতিটি ক্যারেক্টার প্রেরণের জন্য যে সময় ব্যয় হয় তা নির্দিষ্ট থাকে না। | (খ) একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রেরিত হয়। |
(গ) সিনক্রোনাসের তুলনায় বীর গতিসম্পন্ন। | (গ) দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সমিট হয়। |
(ঘ) দ্বিমুখী ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে একে সহজে ব্যবহার করা যায়। | (ঘ) দ্বিমুখী ডাটা ট্রান্ডমিশন সিস্টেমে একে সহজে ব্যবহার করা যায়। |
(ঙ) এর ইফিসিয়েক্সি কম। | (ঙ) এর ইফিসিয়েন্সি বেশি হয় না। |
(চ) Local স্টোরেজের প্রয়োজন হয় না। | (চ) Local স্টোরেজের প্রয়োজন হয়। |
(ছ) এ পদ্ধতিতে Pulse এর প্রয়োজন হয় না | (ছ) উভয় টার্মিনালের মধ্যে সমন্বয়সাধনের জন্য Syne pulse এর প্রয়োজন হয়। |
(জ) প্রেরিত ডাটার ভুল নির্ণয় করা কষ্টকর। | (জ) প্রেরিত ডাটার ভুল নির্ণয় পদ্ধতি তুলনামূলক সহজ |
(ঝ) ডাটা ট্রান্সমিশনের খরচ কম। | (ঝ) অতিরিক্ত হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হয় ফলো ট্রান্সমিশন খরচ বেশি। |
(ঞ) ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য স্টার্ট (Start) এবং স্টপ (Stop) বিটের প্রয়োজন হয়। | (ঞ) স্টার্ট (Start) ও স্টপ (Stop) বিট থাকে না। |
(ট) কী-বোর্ড টু কম্পিউটার কমিউনিকেশনে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। | (ট) কম্পিউটার টু কম্পিউটারে অধিক পরিমাণে ডাটা ট্রান্সমিট করার জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। |
আরও দেখুনঃ
3 thoughts on “সিনক্রোনাস ও অ্যাসিনক্রোনাস কমিউনিকেশন পদ্ধতি (Synchronous and asynchronous communication technique)”