আজকে আমরা রেডিও, মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা ট্রান্সমিশন মিডিয়া ও সংযোগের অন্তর্গত।
Table of Contents
রেডিও, মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of radio, microwa and satellite communication)
রেডিও কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য
ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীডের উপর ভিত্তি করে ডেটা কমিউনিকেশন গতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়;যথা-
১। ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band)
২। ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band)
৩। ব্রড ব্যান্ড (Broad Band)
ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band)ঃ
ন্যারো ব্যান্ডে ডেটা স্থানান্তরের গতি সাধারণত 45 bps থেকে সর্বোচ্চ 300 bps পর্যন্ত থাকে। সাধারণত ধীরগতির ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এ ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। টেলিগ্রাফিতে তারের ব্যবহার বেশি হওয়ার co স্থানান্তরের গতি কম। টেলিগ্রাফিতে ন্যারো ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়।
ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band)ঃ
ভয়েস ব্যান্ডে ডেটা চলাচলের গতি সাধারণত সর্বনিম্ন 300 bps থেকে সর্বোচ্চ 9600 bp হয়ে থাকে। সাধারণত টেলিফোনে এই ব্যান্ড বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে কম্পিউটার ডেটা কমিউনিকেশনে কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে এবং কার্ড রিডার থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ভয়েস ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়।
ব্রড ব্যান্ড (Broad Band)ঃ
উচ্চ গতিসম্পন্ন এ ব্যান্ডের ডেটা চলাচলের গতি। mbps (mega bit per second) হতে সর্বে কয়েক gbps (gigabit per second) পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল, DSL (Digital Satellite Lin ক্যাবল, মডেম, রেডিও লিংকে ব্রড ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। ব্রড ব্যান্ড স্পিডের জন্য বাংলাদেশে DSL ক্যাবল মডেমের নাম হওয়ায় ব্রডব্যান্ড প্রচলনই বেশি।
নিম্নে Radio communication system এর বৈশিষ্ট্যাবলি উল্লেখ করা হলঃ
(ক) ইনফ্রারেড ও লেজার কমিউনিকেশন মিডিয়া অপেক্ষা খরচ বেশি পড়ে
(খ) এতে Installation প্রক্রিয়ায় trained technician এর প্রয়োজন পড়ে
(গ) সাধারণত কয়েকশত কিলোমিটার পর্যন্ত Data transmit করতে পারে।
(ঘ) এতে Transmission loss বিদ্যমান।
(ঙ) এতে বৃষ্টি, ঝড়, তুফান ইত্যাদি কারণে Data interference জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
(চ) এটার ফ্রিকুয়েন্সি <300 GHz
(ছ) ওয়েভলেংথ। মিলিমিটার থেকে 1,00,000 কিমি.
(জ) এটা টেলিকমিউনিকেশন ও টেলিভিশন ব্রডকাস্টিং-এ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য
মাইক্রোওয়েভের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যার জন্য ব্যাপকভাবে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহৃত হচ্ছে। বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ :
(ক) ব্যান্ডউইডথ (Bandwidth)
(খ) ডাইরেক্টিভিটি (Directivity)
(গ) বিশ্বস্ততা (Reliability)
(ঘ) পাওয়ার (Power requirements)
(ঙ) গেইন (Gain)
(ক) ব্যান্ডউইডথ (Bandwidth) :
মাইক্রোওয়েভের রেঞ্জ অধিক হওয়ায় চ্যানেল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পায়। ফলে, কমিউনিকেশনে চ্যানেল সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়। এতে সিগন্যাল-টু-নয়েজ রেশিও বৃদ্ধি পায়।
(খ) ডাইরেক্টিভিটি (Directivity) :
মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গের ফ্রিকুয়েন্সি বেশি হওয়ায় অ্যান্টেনার সাইজ হ্রাস পায় ডাইরেক্টিভিটি বৃদ্ধি পায়। মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ বিভিন্ন দিকে না ছড়িয়ে সুনির্দিষ্ট দিক গমন করে।
(গ) বিশ্বস্ততা (Reliability)ঃ
মাইক্রোওয়েভের ক্ষেত্রে লাইন অব সাইট (Line of sight) প্রপাগেশন ঘটে। ফলে প্রেরনা গ্রাহকের মধ্যে সরাসরি শক্তির স্থানান্তর ঘটে বলে ফেজিং ইফেক্ট (Fading effect) কম ঘটে। তা ছাড়া, মাইক্রোওয়েভ প্রপাগেশ প্রতিকূল আবহাওয়ার কোনো প্রভাব পড়ে না।
(ঘ) পাওয়ার (Power requirements)ঃ
মাইক্রোওয়ের তরঙ্গের ক্ষেত্রে প্রেরক ও গ্রাহক উভয়ের জন্য অপেক্ষাকৃত পাওয়ার প্রয়োজন হয়। ফলে, অন্যান্য কমিউনিকেশনের চেয়ে এতে রিপিটার স্টেশন (Repeater Station) কম প্রয়োজন হয়।
(ঙ) গেইন (Gain)ঃ
মাইক্রোওয়েভের ক্ষেত্রে তরঙ্গ সুনির্দিষ্ট দিকে গমন করে বলে তরঙ্গের অপচয় কম হয়। ফলে, গেইন বৃদ্ধি পায়।
নিম্নে Satellite communication system এর বৈশিষ্ট্যাবলি উল্লেখ করা হলঃ
(ক) এতে খরচের পরিমাণ বেশি।
(খ) এতেও installation প্রক্রিয়ায় trained technician প্রয়োজন।
(গ) সাধারণত 25-30 মাইল দূরত্বে Data transmit করা যায়।
(ঘ) এতে EMI সমস্যা আছে।
(ঙ) এর Transmission speed প্রায় 16 Gbps
(চ) এটার রেডিও স্পেকট্রাম ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ 1.0 থেকে 300 GHz
(ছ) এটা পয়েন্ট টু পয়েন্ট কমিউনিকেশনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য
নিচের চিত্রের মাধ্যমে স্যাটেলাইটের সাধারণ গঠন দেখানো হল। এটা মহাশূন্যে স্যাটেলাইট এবং ভূমিতে অবস্থিত আর্থ স্টেশনের মধ্যকার যোগাযোগ রক্ষা করে। এ প্রকার টেরিস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক টেলিফোন লিংক অথবা ভূমি কেন্দ্রের সাথে অন্য যে কোন সেবা বহন করে। ব্যবহারকারী আর্থ স্টেশন বেস ব্যান্ড সিগন্যাল উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণ করে স্যাটেলাইটে সম্প্রচার করে। ফলে স্যাটেলাইটকে স্পেসে বৃহত্তর রিপিটার হিসেবে চিন্তা করা হয়।
অর্থাৎ তা আপলিংক ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে মডলেটেড (আরএফ/RF) ক্যারিয়ার গ্রহণ করে এবং তা পুনরায় ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে পৃথিবীর আর্থ স্টেশনে পাঠিয়ে দেয়। আপ এবং ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে পৃথিবীর আর্থ স্টেশনে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। আপ এবং ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সির তারতম্য থাকায় তাদের মধ্যে কোন প্রকার ইন্টারফিয়ারেন্স সংগঠিত হয় না।
পৃথিবীর গ্রাহক স্টেশন সিগন্যালটি গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে পুনরায় বেস ব্যান্ড সিগন্যালে রূপান্তর করে গ্রাহকের টেরিস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্কে প্রদান করে।
বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্যাটেলাইটের মধ্যে WARC- 1979 টি 500 MHz ব্যান্ড উইডদের মধ্যে 6 GHz কে আপলিংক সম্প্রচারে এবং অন্য 500 MHz এর ব্যান্ড উইডথ বিশিষ্ট 4 GH2 সিগন্যালকে ডাউন লিংক সম্প্রচারে ব্যবহার করে। বাস্তবে 5.275 থেকে 7.075 GHz সিগন্যালকে আপ লিংক এবং 3.4 থেকে 4.8 GHz সিগন্যাল ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। 500 MHz ব্যান্ডকে সচরাচর । 2টি চ্যানেলে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি চ্যানেল প্রায় 40 MHz ফ্রিকুয়েন্সি বিশিষ্ট।
প্রতিটি 40 MHz চ্যানেলের সম্প্রচার ক্ষমতা 5 থেকে 10 ওয়াট এ 12 টি ট্রান্সপন্ডার একটি করে টিভি চ্যানেল অথবা 1500 টি অ্যানালগ FM রে সার্কিট বহন করে। ডিজিটাল মডুলেশন ব্যবহার করলে ট্রান্সপন্ডারের ডাটার হার 50 থেকে 100 M byte হবে। SSB মডুলেশন ব্যবহার করলে প্রায় 10,000 ভয়েস সার্কিট একটি একক স্যাটেলাইট ট্রান্সপন্ডার বহন করতে পারে।
14/12 GHz ব্যান্ড বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্যাটেলাইটে ব্যবহার করলে আপ লিংক ফ্রিকুয়েন্সির মান হবে 12.75 থেকে 145 GHz এর মধ্যে এবং ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সির মান হবে 10.7 থেকে 13.3 GHz অথবা 12.5 থেকে 12.7 GHz এর মধ্যে এ ব্যান্ডের ফ্রিকুয়েন্সিকে তখন কোথাও ব্যবহার করা হয় না। এ প্রকার ব্যান্ড রেইন অ্যাটেনুয়েশন সমস্যা সৃষ্টি করে। তৃতীয় আর একটি ব্যান্ড 20/30 GHz. যার ব্যান্ডউইডথ 2.5 GHz তাও ব্যবহারের চিন্তা চলছে।
এখানে 275 থেকে 31 GHz এর ফ্রিকুয়েন্সিতে ডাউন লিংক ফ্রিকুয়েন্সি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অদূর ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির বিদ্যা ব্যবহার করে তাকে বিভিন্ন কাজে ও সম্প্রচারের কাজে লাগানো যাবে।
স্যাটেলাইটের ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড (Frequency bands of satellite)
চিত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকুয়েন্সি স্পেকট্রাম দেখানো হয়েছে। স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা সুপার হাই ফ্রিকুয়েন্সি এবং এক্সট্রা হাই ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহৃত হয়। টেবিলে স্যাটেলাইট ফ্রিকুয়েন্সি স্পেকট্রাম দেখানো হ ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকুয়েন্সি স্পেকট্রাম শুধুমাত্র স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনে ব্যবহৃত হয় না বরং তা টেলিকমিউনিকেশনেও প্রয়োগ করা হয়।
Frequency band | Range (GHz) |
L | 1-2 |
S | 2-4 |
C | 4-8 |
X | 8-12 |
Ku | 12-18 |
K | 18-27 |
Ka | 27-40 |
Milimeter | 40-300 |
আরও দেখুনঃ
1 thought on “রেডিও, মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of radio, microwa and satellite communication)”