ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ (Wireless propagation modes wit diagram)

আজকে আমরা ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা ট্রান্সমিশন মিডিয়া ও সংযোগের অন্তর্গত।

 

ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ

 

ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ (Wireless propagation modes wit diagram)

ওয়্যারলেস ওয়েভ গমন করার ধরনসমূহকে নিম্নভাগে ভাগ করা হয়েছে।

(ক) গ্রাউন্ড ওয়েভ প্রপাগেশন
(খ) স্পেস ওয়েভ প্রপাগেশন
(গ) স্কাই ওয়েভ প্রপাগেশন।

 

google news logo

 

ওয়্যারলেস বা রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ও প্রপাগেশনের প্রাথমিক মোডসমূহ নিম্নরূপ :

ব্যান্ড (Band)

ফ্রিকুয়েন্সি (Frequency)

ওয়েভলেংথ(Wavelength)

প্রপাগেশন ভায়া (Propagation Via)

Extremely Low Frequency (ELF) 3-30 Hz 1,00,000-10,000 km ইহা ভূ-পৃষ্ঠ হতে আয়নোস্ফোয়ারে D পর্যন্ত পরিচালিত হয়
Super Low Frequency(SLF) 30-300 Hz 10,000-1000 km ইহা ভূ-পৃষ্ঠ হতে আয়নোস্ফোয়ার এর মধ্যে পরিচালিত হয়
Ultra Low Frequency (ULF) 03-3 kHz
(300-3.000 Hz)
1000-100 km

Very Low Frequency (VLF) 3-30 kHz
(3,000-30.000 Hz)
100-10 km

Low Frequency (LF) 30-300 kHz (30,000-3,00,000Hz) 10-1 km

Medium Frequency (MF) 300-3000 kHz
(3,00,000-30,00,000 Hz)
1000-100 m


সারফেসওয়েভ

High Frequency (HF)
(Short wave)
3-30 MHz
(30,00,000-30,000,000 Hz)
100-10m সারফেসওয়েভ
Very High Frequency(VHF) 30-300 MHz
(30,000,000-3,00,000,000 Hz)
10-1 cm Line of sight প্রপাগেশন
Ultra High Frequency(UHF) 300-3000 MHz
(3,00,000,000-3,000,000,000 Hz)
100-10 cm

Super High Frequency(SHP) 3-30 GHz (3,000,000,000-30,000,000,000 Hz) 10-1 cm

Extremely High Frequency (EHF) 30-300 GHz
(30,000,000,000-300,000,000,000Hz)
10-1 m

Tremendously High Frequency (THF) 0.3-3 THz
(300,000,000,000-3,000,000,000,000 Hz)
1-0.1mm

 

গ্রাউন্ড বা সারফেস ওয়েভ (Ground or surface wave)ঃ

যে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ ভূ-পৃষ্ঠ বরাবর গমন করে, তাকে গ্রাউন্ড বা সারফেস ওয়েভ বলে। এটিও ওয়েভের মাধ্যমে অনুভূমিকভাবে পোলারাইজড ওয়েভ গমন করতে পারে না। কারণ, অনুভূমিকভাবে পোলারাইজড ওয়েভের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক ফিল্ড অনুভূমিক দিকে সজ্জিত থাকে এবং এটা ভূ-পৃষ্ঠের সাথে শর্ট সার্কিট সৃষ্টি করে। ফলে গ্রাউন্ড ওয়েডের ক্ষেত্রে উল্লখভাবে পোলারাইজড ওয়েভ আবশ্যক।

গ্রাউন্ড ওয়েভ উৎপন্ন হয়, যখন প্রেরক অ্যান্টিনাকে ভূমির খুব কাছাকাছি স্থাপন করা হয়। এ ওয়েভ ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ব্রডকাস্ট পদ্ধতি রেডিও কমিউনিকেশনে এবং নিম্ন রেঞ্জের ফ্রিকুয়েন্সির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ

 

গ্রাউন্ড ওয়েভ গমনের বৈদ্যুতিক ফিল্ড ভূমির সাথে টার্মিনেটেড হয়। ফলে বৈদ্যুতিক ফিল্ডের দ্বারা আবেশিত হয়ে ভূমিতে বিপরীত চার্জ উৎপন্ন হয়। সাউন্ড ওয়েভ গমনের একই সাথে বৈদ্যুতিক চার্জও গমন করে। এর ফলে ভূমিতে বাহিত হয়। তুমি বি পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করতে পারে না, কারণ এতে কিছু রেজিস্ট্যান্স বিদ্যমান থাকে এবং ভূমির কারেন্টের জন্য ওয়েভ প্রপাগেশনে কিন্তু পাওয়ার অপচয় হয়। ফলে ওয়েভ গমনের সাথে ফিল্ডের শক্তি হ্রাস পেয়ে থাকে ৪.২৯ নং চিত্রে মাউন্ড ওয়েত প্রপাগেশন প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

স্পেস ওয়েভ (Space wave)

প্রেরক অ্যান্টিনা হতে গ্রাহক অ্যান্টিনাতে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক শক্তি ট্রপোস্কোয়ারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলে সে ওয়েভকে স্পেস ওয়েভ নামকরণ করা হয়। গ্রাউন্ড ওয়েভ এবং স্পেস ওয়েডের মধ্যে পার্থক্য হলো, গ্রাউন্ড ওয়েও ভূ-পৃষ্ঠ বরাবর গমন করে, কিছু স্পেস ওয়েত কোথাও ভূমি স্পর্শ করে না এবং দুটো অ্যান্টিমার মধ্যে সরাসরি গমন করে থাকে। স্পেন ওয়েড উৎপন্ন করতে এবং গ্রাউন্ড ওয়েত পরিহার করতে প্রেরক এবং গ্রাহক অ্যান্টিনাকে ভূমি হতে অনেক উঁচুতে স্থাপন করতে হয়। এক্ষেত্রে স্পেস ওয়েত সম্পূর্ণ শক্তি বহন করে এবং কোন গ্রাউন্ড ওয়েভ বিদ্যমান থাকে না।

স্পেস ওয়েভ সাধারণত VHF এবং UHF রেঞ্জে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কারণ, এ রেঞ্জের ফ্রিকুয়েন্সিগুলো আয়নোস্ফেয়ার হতে প্রতিফলিত হতে পারে না এবং সেজন্য এ রেঞ্জের ফ্রিকুয়েন্সিতে স্কাই ওয়েত প্রপাগেশন সম্ভব নয়। তা ছাড়া এ রেঞ্জের সিগন্যাল যদি মাউন্ড ওয়েভ হিসেবে গমন করে, তবে ভূমিতে লস এত বেশি হয় যে, এ গুয়েভগুলো কয়েক মিটারের অধিক দূরত্ব গমন করতে পারে না।

স্পেস ওয়েভ প্রপাগেশনে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক শক্তি দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে প্রেরক অ্যান্টিনা হতে গ্রাহক অ্যান্টিনাতে পৌঁছে কিছু ওয়েভ সরাসরি প্রেরক অ্যান্টিনা হতে গ্রাহক অ্যান্টিনাতে পৌঁছে। আবার কিছু ওয়েও ভূমির দিকে গমন করে। যে সমস্ত ওয়ে ভূমির দিকে ধাবিত হয়, তারা ভূমি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রতিফলিত হয় এবং প্রতিফলিত হয়ে গ্রাহক অ্যান্টিনাতে পৌঁছে। নিচের চিত্রে এরুপ অবস্থা দেখানো হয়েছে।

চিত্র হতে এটা স্পষ্ট লক্ষ করা যায় যে, সরাসরি ওয়েভ অপেক্ষা প্রতিফলিত ওয়েভ অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে। গ্রাহক অ্যান্টিনাতে গৃহীত ওয়েতের শক্তি সরাসরি ওয়েভ এবং প্রতিফলিত ওয়েভের শক্তির ভেক্টর যোগফলের সমান হয়। যেহেতু প্রতিকলিত ওয়েভ সরাসরি ওয়েভ অপেক্ষা অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে, সেহেতু গ্রাহক আন্টিনাতে গৃহীত ভারতের মধ্যে ফেজ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় এবং গৃহীত সিগন্যালের শক্তি হ্রাস পায়।

ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ

 

স্কাই ওয়েভ (Sky wave)

যে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ বিকিরিত হয়ে উপরের দিকে গমন করে আরনোস্ফেয়ারে পৌঁছে এবং আগুনোস্ফেরিক স্তর হ প্রতিফলিত হয়, তাকে স্কাই ওয়েত বলে। আয়নোস্ফেয়ার হতে ওয়েত প্রতিফলিত এবং প্রতিসণর হয়ে থাকে বলে ভাই ওয়েত অে দূরত্ব পর্যন্ত গমন করতে পারে এবং এজন্য অধিক দূরত্ব বিশিষ্ট কমিউনিকেশনে এ ওয়েভ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

নিম্ন এবং মধ্যম রেঞ্জের ফ্রিকুয়েন্সির সিগন্যাল আয়নোস্ফেয়ারের স্তর হতে প্রতিফলিত হয় বটে, কিন্তু দিনের বেলা এ সিগন্যাসে। শক্তি এর কম থাকে যে, এটা যোগাযোগের জন্য খুবই নগণ্য। যাহোক রাত্রিকালে এ সিগন্যালের শক্তি কিছুটা বেশি থাকে, যা ছা শুয়েক যোগাযোগের জন্য উপযোগী হয়ে থাকে। সিগন্যাল ফ্রিকুয়েন্সি বৃদ্ধি করা হলে আরনোস্ফেয়ার হতে প্রতিফলিত স্কাই ওয়েভের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং স্কাই ওয়েভ যোগাযোগের জন্য উপযোগী হয়। এ ফ্রিকুয়েন্সি মোটামুটি 3-10 মেগাহার্টজ পর্যন্ত ধরা হয়।

সিগন্যাল ফ্রিকুয়েন্সি 10-30 মেগাহার্টজ পর্যন্ত স্কাই ওয়েভের সিগন্যাল শক্তি এত যথেষ্ট মানের হয় যে, প্রায় কয়েক হাজা কিলোমিটার পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব।

যখন সিগন্যাল ফ্রিকুয়েন্সি 30 মেগাহার্টয়া এর অধিক হয়, তখন এ সিগন্যালকে আয়নোস্কেয়ার পৃথিবীর দিকে প্রতিফলিত করছে। ব্যর্থ হয়। এ সিগন্যালগুলো আয়নোস্কেয়ারকে ভেদ করে আরও উপরের স্তরে গমন করে।

আয়নোস্ফেয়ারের অবস্থা সময়ের থেকে সময়ে, দিনের পর দিন, মৌসুম থেকে মৌসুমে পরিবর্তিত হয়। হঠাৎ ঝড়ের ফলেও আয়নোস্কেয়ারে পরিবর্তন সংগঠিত হয়। আয়নোস্ফেয়ারের এ পরিবর্তনসমূহ সম্পূর্ণরূপে নিয়মিতভাবে সংঘটিত হয় এবং এজন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানে এটা খুব সহায়ক হয়।

 

ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ

 

আয়নোস্ফেয়ারে বায়ুমণ্ডলের কণিকাগুলো চার্জিত অবস্থায় থাকে। কোন এলাকা চার্জিত অবস্থায় থাকলে কন্ডাকটিভিটি বৃদ্ধি প এবং এর ডাই-ইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট হ্রাস পায়। শূন্যস্থানের কন্ডাকটিভিটি শূন্য হয় এবং মাধ্যমটি বিশুদ্ধ ডাই-ইলেকট্রিক হিসাবে কাজ করে। ফলে এরূপ মাধ্যমে শুধুমাত্র সরণ (Displacement) কারেন্ট প্রবাহিত হয়। কারণ ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ এবং কারেন্টের মধ্যে কৌণিক ব্যবধান 90° থাকে। কিন্তু আয়নোস্কেয়ারে কন্ডাকটিভিটি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেজ 90° হতে হ্রাস পায় এবং এনে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক শক্তির অপচয় হয়।

যখন সিগন্যাল ফ্রিকুয়েন্সি খুব কম হয়, এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেশি হয় এবং এক তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দূরত্বের জন্য আয়নাইজেশন ঘনত্বের পরিবর্তনও বেশি হয়। ফলে আয়নোস্ফেয়ার মাধ্যমকে অপ্রত্যাশিত বিচ্ছিন্ন মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা যায়। ফলশ্রুতিতে মাধ্যম হতে সিগন্যাল প্রতিফলিত হয় এবং শক্তির শোষণ নগণ্য হয়। আবার সিগন্যাল ফ্রিকুয়েন্সি যখন খুব বেশি হয়, এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য খুব কম হয় এবং আয়নোক্রেয়ার মাধ্যমকে ডাই-ইলেকট্রিক মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা যায়, যা প্রতিসরণ তলে পরিণত হয়।

এ ক্ষেত্রে মাঝামাঝি ফ্রিকুয়েন্সিতে আয়নোস্কেয়ারকে পাতলা দুটো মাধ্যমের সংযোগ মাধ্যম হিসাবে ধরে নেয়া যায়, যাতে সিগনাল আংশিক প্রতিফলিত হয় এবং আংশিক প্রতিসরিত হয়। ফলে আয়নোস্ফেয়ারের বিভিন্ন মাধ্যম হতে প্রতিফলিত / প্রতিসরিত ওয়েভের সমষ্টি দ্বারা লব্ধি ওয়েভ পাওয়া যায়।

আরও দেখুনঃ

2 thoughts on “ব্লক ডায়াগ্রামসহ ওয়্যারলেস প্রপাগেশনের ধরনসমূহ (Wireless propagation modes wit diagram)”

Leave a Comment