আজকে আমরা রেডিও, মাইক্রোওয়েভ এবং ইনফ্রারেড কমিউনিকেশন সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা ট্রান্সমিশন মিডিয়া ও সংযোগের অন্তর্গত।
Table of Contents
রেডিও, মাইক্রোওয়েভ এবং ইনফ্রারেড কমিউনিকেশন ( Radio, microwave and infrared communication)
রেডিও কমিউনিকেশন (Radio communication)ঃ
রেডিও কমিউনিকেশন বা রেডিও ট্রান্সমিশনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
(ক) Narrow band radio transmission এবং
(খ) Spread spectrum radio transmission ইত্যাদি
নিম্নে এদের বর্ণনা দেয়া হলোঃ
(ক) Narrow band radio transmissionঃ
Single radio frequency এর ক্ষেত্রে Narrow band communicat সংঘটিত হয়। একটি নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে Infrared transmission এর চেয়েও Narrow band radio transmission এর বেশি। এ পদ্ধতিতে Receiver কিংবা Transmitter কোনটিই directly সংযুক্ত থাকে না এবং signal wall, building atmosphere এর মধ্য দিয়ে Transmit হতে পারে।
(খ) Spread spectrum radio transmissionঃ
Communication system এর কতিপয় সমস্যা সমাধান কল্পে military কর্তৃক spread spectrum radio transmission systemটি develop করা হয়। এ পদ্ধতিতে Transmission system এর reliabilit বৃদ্ধি পায় এবং Interference Jamming কমে যায়। এ পদ্ধতিটি WAN (Wide Area Network) এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নাম থেকে বুঝা যায় যে, এ transmission পদ্ধতিতে একাধিক Frequency তে message transmit করা যায় ।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনে কোনো ধরনের ক্যাবলের প্রয়োজন হয় না। টেলিকমিউনিকেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপনে অনেক ক্যাবলের প্রয়োজন হয় এবং ক্যাবলগুলো বিভিন্ন দূরত্বে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দেওয়ার ফলে অনেক খরচ পড়ে। কিন্তু ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনে প্রেরক যন্ত্রে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে এক কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটার বা এক ডিভাইসের সাথে অন্য ডিভাইসের সংযোগ স্থাপন করা হয়।
আধুনিক অফিসগুলোতে আজকাল ওয়্যারলেস রাউটার ব্যবহার করে কতকগুলো কম্পিউটারের মধ্যে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়। এতে বাড়তি কোনো তারের ঝামেলা থাকে না। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যম হিসেবে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি কমিউনিকেশন, মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশন, ইনফ্রারেড কমিউনিকেশন ব্যবহৃত হয়। স্মার্টফোন, পিডিএ, ট্যাব, ল্যাপটপ, হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগে ওয়ারলে কমিউনিকেশন সিস্টেম আণী ভূমিকা পালন করছে।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম বিভিন্নভাবে করা যায়। যেমন-
১। ওয়্যারলেস প্যান (Wireless PAN)
২। ওয়্যারলেস ল্যান (Wireless LAN)
৩। ওয়্যারলেস ম্যান (Wireless MAN
৪।ওয়্যারলেস ওয়ান (Wireless WAN)
১। ওয়্যারলেস প্যান (Wireless PAN) :
ক্ষুদ্র দূরত্বে পার্সোনাল ডিভাইসগুলোর মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ওয়্যারলেস প্যান ব্যবহার করা হয়। যেমন- ব্লু-টুথ ও ইনফ্রারেডের মাধ্যমে হ্যান্ডসেট বা ল্যাপটপের মধ্যে যোগাযোগের পদ্ধতি হলো WPAN
২। ওয়্যারলেস ল্যান (Wireless LAN)ঃ
WLAN পদ্ধতিতে প্রতিটি কম্পিউটারের সাথে, একটি রেডিও মডেম এবং অ্যান্টেনা থাকে, যার সাহায্যে প্রতিটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। বর্তমানে ছোট প্রতিষ্ঠান এবং বাসায় ওয়ারলেস ল্যান অত্যন্ত জনপ্রিয়। 100 মিটারের অধিক দূরত্বসীমায় WLAN কার্যকরী।100 মিটারের অধিক দূরত্বসীমায় WLAN কার্যকরী।
৩। ওয়্যারলেস ম্যান (Wireless MAN) :
কয়েকটি Wireless LAN নিলে একটি Wireless MAN গঠিত হয়। এক্ষেত্রে Wi-MAX প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। দূরত্ব 5 কিলোমিটারের বেশি হলে WMAN নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়।
ওয়্যারলেস ওয়ান (Wireless WAN)ঃ
বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকায় অবস্থিত একাধিক WLAN ও WMAN কে নিয়ে Wireless WAN Wireless WAN এ বিশেষ ডিভাইস ও প্রযুক্তির সাথে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে তথ্য আদান- আনানের কাজ সম্পন্ন করা যায়। 15 কিলোমিটারের অধিক দূরত্বে WWAN নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়।
মাইক্রোওয়ের কমিউনিকেশন (Microwave communication)ঃ
মাইক্রো শব্দের আভিধানিক অর্থ ক্ষুদ্র এবং ওয়েত শব্দের আভিধানিক অর্থ হল করণ। সুতরাং, ক্ষুদ্র তরঙ্গবিশিষ্ট সিগন্যালকে মাইক্রোওয়ের নামে অভিহিত করা হয়। একটি সিগন্যালের ফ্রিকুয়েন্সি এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে সম্পর্ক বাস্তানুপাতিক সিগন্যালের ফ্রিকুয়েন্সি বৃদ্ধি পেলে তরঙ্গদৈর্ঘ্য হ্রাস পায়। সুতরাং সিগন্যালের ফ্রিকুয়েন্সি যত বেশি হবে, তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য তত কম হবে।
এ ক্ষেত্রে করা যায় যে, উচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি বিশিষ্ট সিগন্যালকে মাইক্রোওয়েভ বলা যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থায় মাইক্রোওয়েভকে সীমাবদ্ধ করা খুবই কঠিন। সাধারণত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভের সেন্টিমিটার এককে প্রকাশিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে মাইক্রোওয়ের ধরা হয়। সে দিক দিয়ে বিবেচনা করে বলা যায় যে, 100 থেকে। সেন্টিমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট সিগন্যালকে মাইক্রোওয়েভ বলা যায়, যার ফ্রিকুয়েন্সি (03-30 গিগাহার্টজ (Gita)। তবে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভকে 100 গিগাহার্টজ পর্যন্ত বর্ধিত করা যায়।
চিত্রে একটি তরঙ্গ চিত্র দেখানো হয়েছে। একটি তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য, ফ্রিকুয়েন্সি এবং তরঙ্গের বেগের মধ্যে সম্পর্ক আছে
তরঙ্গদৈর্ঘ্য, ফ্রিকুয়েন্সি এবং বেগের মধ্যে সম্পর্ক হল,
তরঙ্গদৈর্ঘ্য = v/f
এখানে,
f = ফ্রিকুয়েন্সি
v = ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের বেগ = আলোর বেগ = 30 x 10^10 সেমি/সে.
ধরা যাক, 0.3 গিগাহার্টজ ফ্রিকুয়েন্সি বিশিষ্ট একটি তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = (3×10^10)/(0.3×10^9)
= 100 সেমি
আবার, 30 গিগাহার্টজ বিশিষ্ট তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য = (3×10^10)/(0.3×10^9)
= 100 সেমি
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, মাইক্রোওয়েতের ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ 0.3 গিগাহার্টজ হতে 30 গিগাহার্টজ হলে তরঙ্গদৈর্ঘ্য হবে 100 সেনি হতে । সেমি। বিপরীতভাবে বলা যায়, মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গদৈর্ঘ্য 100 সেমি হতে। সেমি হলে ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ হবে। গিগাহার্টজ হতে 30 গিগাহার্টজ।
ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জসহ মাইক্রোওয়েভের প্রয়োগ ক্ষেত্র :
মাইক্রোওয়েভের ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জকে সুনির্দিষ্ট করা খুবই কঠিন। তবুও যোগাযোগ পদ্ধতিতে 100 থেকে 1 সেন্টিমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ওয়েভকে মাইক্রোওয়েভ ধরা হয়। এর ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ 0.3 থেকে 20 গিগাহার্টজ (GHz) ধরা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হতে মাইক্রোওয়েভ উৎপাদন, প্রেরণ এবং পরিমাণ প্রক্রিয়ার ব্যাপক ক্ষেত্র এবং গবেষণা শুরু হয়। কমিউনিকেশনাল ,ইন্ডাস্ট্রিয়াল, বায়োমেডিক্যাল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েড প্রয়োগ হয়। ট্রপোস্ফেরিক কমিউনিকেশ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট কমিউনিকেশন, স্পেস-টু-স্পেস কমিউনিকেশন ইত্যাদি মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশন পদ্ধতির ব্যবহারিক ক্ষেত্র রাডার, এয়ারক্র্যাফ্ট, আন্তর্জাতিক টেলিফোন, টেলিভিশন কমিউনিকেশন, রিমোট সেনসিং ইত্যাদি মাইক্রোওয়েভের প্রয়োগ।
মাইক্রোওয়েভের বিশেষ কিছু সুবিধা যেমনঃ অধিক গভীরে তাপ প্রেরণ, দ্রুত এবং তাৎক্ষণিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ এবং শ প্রেরণের দক্ষতা ইত্যাদির কারণে ইন্ডাস্ট্রিতে মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের দিক দিে ইন্ডাস্ট্রিসমূহকে ফুড ইন্ডাস্ট্রি, রাবার ইন্ডাস্ট্রি, প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, ফরেস্ট পাবলিক ইন্ডাস্ট্রি, মাইনিং প ওয়ার্ক ইত্যাদি গ্রুপে বিভক্ত করা যায়। সাধারণ ইন্ডাকশন হিটিং (Induction Heating) প্রক্রিয়ায়ও মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়।
ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডের উপর ভিত্তি করে মাইক্রোওয়েভের শ্রেণিবিন্যাস (Classification of Microwave on the Basis Frequency Band) :
ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডের উপর ভিত্তি করে মাইক্রোওয়েভকে নিম্নরূপে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়:
ব্যান্ড | ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ (গিগাহার্টজ) |
U | 0.3-1.12 |
L | 1.12-1.7 |
LS | 1.7-2.6 |
S | 2.6-3.95 |
C | 3.95-5.85 |
XC | 5.85-8.2 |
X | 8.2-12.4 |
Ku | 12.4-18.0 |
K | 18.0-26.5 |
Ka | 26.5-40.00 |
নিচের টেবিলে ফ্রিকুয়েন্সির বিভিন্ন এককের মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে,
এ ছাড়াও, সাধারণভাবে সামরিক যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত সাম্প্রতিককালে মাইক্রোওয়েভ ব্যান্ডের শ্রেণিভেদ টেবিলে দেখানো হয়েছে
সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মাইক্রোওয়েভ ব্যান্ড
ব্যান্ড | ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ (গিগাহার্ট) |
A | 0.1-0.25 |
B | 0.25-0.5 |
C | 0.5-1.0 |
D | 1.0-2.0 |
E | 2.0-3.0 |
ইনফ্রারেড কমিউনিকেশন (Infrared communication)
১৮৩৫ সালে মার্সেডিও মেলোনি প্রথম ইনফ্রারেড প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। ডিভাইস থেকে ডিভাইসে তথ্য পাঠানোর জনপ্রিয় প্রযুক্তি হলো ইনফ্রারেড। এ প্রযুক্তিতে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মাধ্যমে তড়িচ্চুম্বকীয় পদ্ধতিতে তথ্য পাঠানো হয়ে থাকে। ইনফ্রারেডের ফ্রিকুয়েন্সি সীমা ব্লু-টুথ প্রযুক্তির চেয়ে অনেক কম। সাধারণত 0.7 থেকে 300 মাইক্রোমিটার দূরত্বের ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান- প্রদান করা যায়।
ইনফ্রারেড এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (মাইক্রোমিটারে)
নিকটবর্তী ইনফ্রারেড | 0.75 মাইক্রোমিটার থেকে 1.4 মাইক্রোমিটার |
ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড | 1.4 মাইক্রোমিটার থেকে 3 মাইক্রোমিটার |
মধ্যবর্তী তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড | 3 মাইক্রোমিটার থেকে 8 মাইক্রোমিটার |
অধিক দূরত্বের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড | 15 মাইক্রোমিটার থেকে 1000 মাইক্রোমিটার |
প্রথম পর্যায়ে সরকারি এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কাজে ইনফ্রারেড ব্যবহার করা হলেও জনপ্রিয় এ প্রযুক্তি এখন সবার জন্য উন্মুক্ত।
Infrared transmission system টি TV remote control এ ব্যবহার করা হয়। রিমোট কন্ট্রোলটি Infrared light signal, যা টেলিভিশন receiver এর Instruction code ধারণ করে তা pulse আকারে receiver এ পাঠায়। চার ধরনের Infrared Communication লক্ষ করা যায়, যথা-
(ক) Broadband optical telepoint ঃ
এ পদ্ধতিতে Broadband Technology ব্যবহার করে Data transmit করা হয়।
(খ) Line-of-sight Infraredঃ
এ ধরনের Communication receiver 3 transmitter এর মধ্যবর্তী line of sight path সংগঠিত হয়ে থাকে।
(গ) Reflective Infraredঃ
এ পদ্ধতিতে Wireless PC-সমূহ হতে Signal একটি কেন্দ্রীয় Unit এ যায়, পরবর্তীতে সেখান থেকে সকল node এ signal transmit হয়ে থাকে।
(ঘ) Scatter Infraredঃ
এ পদ্ধতিতে 100 feet দূরত্বের মধ্যে reliably data receiver এর নিকট পৌঁছে যদিও transmission way-এর মধ্যে wall, floor কিংবা ceiling ইত্যাদি থাকে। Infrared communication-টি 100 feet দূরত্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি speedfull এবং এ পদ্ধতিটি LAN, WAN এই দুটি transmission এই ব্যবহার করা সম্ভব।
আরও দেখুনঃ